যশোর: যশোরের মণিরামপুরে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর ধর্ষণের ভিডিও চিত্র ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। একই সাথে অপর এক পরীক্ষার্থীর শ্লীতাহানীর ভিডিও চিত্র ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়া হয়। বখাটেরা বুধবার এ চিত্র ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়। এরপর এলাকায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে ভিডিও চিত্র দেখে বখাটেদের সনাক্ত করে স্থানীয় জনতা তাদেরকে ধরে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন। তবে পুলিশ সোপর্দ করার বিষয়টি অস্বীকার করেছে।
এদিকে বিকেলে দুই শিক্ষার্থীর স্কুলের শিক্ষক-সহপাঠিরা যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের চালকিডাঙ্গা বাজারে দোষীদের শাস্তির দাবিতে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন করেন। এ রিপোর্ট (রাত ৯টা) লেখার সময় ধর্ষিতা মণিরামপুর থানায় অবস্থান করছিলো।
স্থানীয়রা জানান, গত ১২ ফেব্রুয়ারি রবিবার দুপুর দুইটার দিকে গণিত পরীক্ষা শেষে দুই এসএসসি পরীক্ষার্থী বাড়ি ফেরার পথে উপজেলার বেগারিতলা এলাকার নিমতলা নামক স্থানে পাঁচ বখাটে উপজেলার চালকিডাঙ্গা গ্রামের রুস্তম আলী দফাদারের ছেলে এয়াকুব আলী, টুনিয়াঘরা গ্রামের মৃত নূর আলী বিশ্বাসের ছেলে ইসরাফিল আলম, একই গ্রামের মৃত আজিজুর রহমানের ছেলে আল-আমিন, মুরাদ হোসেনের ছেলে ইমন হোসেন ও আজিজুর রহমানের ছেলে আলমগীর হোসেন তাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে পাশ্ববর্তী একটি বাগানে নিয়ে যায়। সেখানে দুই পরীক্ষার্থীর মধ্যে একজনকে এয়াকুব আলী ধর্ষণ করে এবং ইসরাফিলসহ অন্যরা অপরজনকে শ্লীতাহানী করে। বখাটেরা পুরো ঘটনা মোবাইল ফোনে ভিডিও করে। এসময় শিক্ষার্থীরা বাধা দিতে গেলে বখাটেরা তাদেরকে অস্ত্র দেখিয়ে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয় এবং মারপিট করে।
এ ঘটনা জানাজানি করলে তাদের মোবাইল ফোনে ধারণকৃত ধর্ষণ ও শ্লীতাহানীর ভিডিও ফুটেজ ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়াসহ হত্যার হুমকি দেয় বখাটেরা। এরপর গত বুধবার বখাটেরা ওই ভিডিও ফুটেজ ইন্টারনেটে ছেড়ে দিলে এলাকায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয়রা বখাটে এয়াকুব আলী, ইমন ও আল-আমিনকে শনাক্ত করে ধরে গণপিটুনি দিয়ে স্থানীয় ভোজগাতী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে নেন। পরে ইউপি চেয়ারম্যান তাদেরকে পুলিশে সোপর্দ করেন।
ধর্ষিতার মা জানান, ‘তার মেয়ের ওপর যে পাশবিক নির্যাতন করা হয়েছে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই’।
ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক জানান, বখাটেদেরকে তার কার্যালয়ে আনলে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
ঘটনাটি জানার পর দুই এসএসসি পরীক্ষার্থীর স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার দুপুরে যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের চালকিডাঙ্গা বাজারে দোষীদের শাস্তির দাবিতে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন করে।
মণিরামপুর থানার ওসি বিপ্লব কুমার নাথ জানান, জনতা কাউকে আমাদের কাছে সোপর্দ করেনি। তবে ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রী অভিযোগ দেয়ায় একটি মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।