ঢাকা: পাঁচ বস্তা টাকা পাহারা দিয়েছেন দু’দিন ধরে। এই সময়ে তার নাওয়া খাওয়া কিছুই হয়নি। পেটে পড়েনি এক ফোটা দানাপানিও। এতে ভীষণ দূর্বল হয়ে পড়েছেন হাবিব ওরফে সোহেল।
সোহেলকে চিনতে পাঠকদের অসুবিধা হবার কথা নয়। সোহেল হচ্ছে কিশোরগঞ্জের সোনালী ব্যাংক ডাকাতির প্রধান আসামী। মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে রাজধানীর শ্যামপুর বালুর মাঠের ৮ নম্বর রোডের তনি ভিলার তিন তলা থেকে র্যাব সদস্যরা লুণ্ঠিত টাকা ও এক সহযোগীসহ তাকে গ্রেফতার করেন।
র্যাবের মুখপাত্র এটিএম হাবিবুর রহমান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শ্যামপুর বালুর মাঠ এলাকার একটি সাত তলা ভবনের তিন তলা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় ওই বাসা থেকে লুন্ঠিত পাঁচ বস্তা টাকাও উদ্ধার করা হয়। এই টাকার ওজন প্রায় ১২ মন। তবে লুন্ঠিত ১৬ কোটি ৪০ লাখ টাকার মধ্যে কত টাকা উদ্ধার করা হয়েছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে গুনে দেখা হয়নি বলে জানান তিনি।
গত ২৪-২৫ জানুয়ারি কোন এক সময় কিশোরগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত সোনালী ব্যাংকের প্রধান শাখা থেকে অভিনব কায়দায় লুট করা হয় এই পাঁচ বস্তা টাকা। প্রায় ১০০ ফুট সুড়ঙ্গ করে অনেকটা সিনেমাটিক স্টাইলে ডাকাতি করা হয় টাকাগুলো। ২৬ জানুয়ারি রোববার সকালে ব্যাংকে এসে টের পান ব্যাংক কর্মকর্তারা। এ ঘটনায় ঐদিনই ব্যাংকের ডিজিএম শেখ আমানুল্লাহ বাদী হয়ে সদর থানায় একটি মামলা করেন।
গত ২৭ জানুয়ারি ঘটনা অনুসন্ধানে সোনালী ব্যাংকের এমডি প্রদীপ কুমার দত্তের নেতৃত্বে একটি টিম ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এছাড়া র্যাব, সিআইডি ও গোয়েন্দা বিভাগের স্পেশাল তিনটি টিম ঘটনা অনুসন্ধানে কাজ শুরু করে। এর সুত্র ধরে ব্যাংকের ব্যবস্থাপক একেএম হুমায়ুন কবিরসহ ১২ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি এসএম মাহফুজুল হক নুরুজ্জামানও।
পুলিশ জানায়, ব্যাংক ভবনের পার্শ্ববর্তী মরহুম আমিনুল হকের বাড়ির একটি পরিত্যক্ত কক্ষের ভেতর দীর্ঘ সুড়ঙ্গের সন্ধান পাওয়া যায়। ওই বাড়ির অন্য একটি কক্ষে মার্জিয়া আক্তার নামে এক মহিলা দুই কন্যা নিয়ে ভাড়া থাকতেন। তবে ঘটনার ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না বলে পুলিশকে জানিয়েছেন। তিনি জানান, তার স্বামী সৌদি আরব প্রবাসী।
ব্যাংকের ব্যবস্থাপক হুমায়ুন কবীর ভুঞা জানান, সব রেজিস্ট্রার ও লেজার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর ভল্টে ১৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা ছিল বলে নিশ্চিত হন তারা। রাইজিংবিডি