হাসান মাহমুদ, লালমনিরহাট: লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ডাক্তার সঙ্কটে রোগীরা চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। লালমনিরহাটের সদর উপজেলার প্রায় চার লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবার জন্য একমাত্র হাসপাতালটি এখন প্রায় ডাক্তার শুণ্য হয়ে পড়েছে। এতে করে কাংখিত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রোগীরা। প্রতিদিন শত শত রোগী আউটডোর থেকে ডাক্তার না পেয়ে বিনা চিকিৎসায় ফিরে যান।
রবিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের জরুরী বিভাগে রোগীদের ভিড়। সেখানে একজন সহকারি চিকিৎসক রোগিদের সেবা দিচ্ছেন। অনেকেই আবার কাংখিত সেবা না পেয়ে বাড়ি কিংবা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বাইরের ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ছুটছেন চিকিৎসা নিতে। আবার বাইরের ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের খরচসহ ডাক্তারদের ভিজিট দিতে না পারায় চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নি¤œ আয়ের রোগীদের।
এসময় সদর উপজেলার থানাপাড়ার বৃদ্ধ তমিজ উদ্দিন বলেন, তিনি শুনেছিলেন হাসপাতালে নতুন ডাক্তার নিয়োগ দিয়েছে সরকার। তাই তিনি অসুস্থ নাতি শিশু রহিমকেকে (৩) নিয়ে এসেছিলেন চিকিৎসার জন্য । কিন্তু হাসপাতালে তেমন কোন ডাক্তার না পেয়ে রংপুর যাচ্ছেন নাতির চিকিৎসা করাতে ।
একই কথা বলেন সাপটানা গ্রামের ছকিনা বেগম (৪২), তিনি আজ এসেছেন হাসপাতালে নতুন ক‘জন ডাক্তার আসার খবর শুণে। কিন্তু তাঁরা এখনও কেউ কর্মস্থলে উপস্থিত না হওয়ায় চিকিৎসা না নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয় ছকিনা বেগমকে।
হাসপাতাল সুত্রে জানা যায়, সদর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি উন্নত করা হলেও প্রয়োজন সংখ্যক চিকিৎসক ও যন্ত্রপাতি আজও জুটেনি। ডাক্তারের ৩৯টি পদ থাকলেও, সেখানে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৫জন। গাইনির ৩টি পদ দীর্ঘ দিন ধরে শূন্য। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার পদে ২৬ জনের স্থলে কাজ করছেন মাত্র তিনজন। এ ছাড়াও ভর্তি হওয়া ৭০০ রোগীকে দেখভালের জন্য ডাক্তার নেই। ফলে ডাক্তার সংকটে হাসপাতালটিতে চিকিৎসা সেবা নেই বলতে চলে।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা: এ কে এম মোস্তফা কামাল জানান, হাসপাতালটির পরিচালনার জন্য ডাক্তার পূরণের আবেদন করেও ডাক্তার পাওয়া যায়নি। অন্যান্য স্টাফ কম হলেও চালিয়ে নেয়া যায়, কিন্তু ডাক্তার না থাকলে তা কোনোক্রমেই চালিয়ে নেয়া যায় না। ডাক্তার না থাকায় বছরে প্রায় কোটি টাকার ওষুধ বিনামূল্যে পাচ্ছেন না রোগীরা। অন্য দিকে নষ্ট হচ্ছে শত কোটি টাকার এক্স-রে, আলট্রাসনোগ্রাফিসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি।