সিসি নিউজ : গ্রীসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মোহাম্মদের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। ১৫ অক্টোবরের মধ্যে গোলাম মোহাম্মদকে দেশে ফেরার নির্দেশ দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বৃহস্পতিবার দুপুরে তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘গ্রীসের রাষ্ট্রদূতের বিরুদ্ধে পাওয়া অভিযোগ প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। এ জন্য তাকে ১৫ অক্টোবরের মধ্যে ঢাকায় ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঢাকায় ফিরলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গ্রীসসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রদূতের বিরুদ্ধে পাওয়া অভিযোগের সত্যতা মিললেও তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা না নিয়ে সময়ক্ষেপন করছে সরকার। এতে বর্হিবিশ্বে সরকারের ভাবমূার্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।
তারা আরও জানিয়েছেন, অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর গ্রীসের রাষ্ট্রদূতকে দেশে ফেরার জন্য এক মাসের সময় দেওয়া হয়েছে। এত বেশী সময় দেয়া প্রয়োজন ছিল না। তাকে তখনই দেশে তলব করা যেত। কেননা দেশে ফেরার জন্য যে সব আনুষ্ঠানিকতার দোহাই দেওয়া হয়, তা ভিত্তিহীন।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘এই সরকার কখনোই দুর্নীতির সঙ্গে আপোষ করবে না। আর তাই গ্রীসের রাষ্ট্রদূতকে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ফিরে আসার ক্ষেত্রে কিছু আনুষ্ঠানিকতা থাকে। এ জন্যই তাকে এক মাসের সময় দেওয়া হয়েছে। চাইলেই তাৎক্ষণিকভাবে তলব করা যায় না।’
এ প্রসঙ্গে গ্রীসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মোহাম্মদ ফোনে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনি তদন্ত কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করুন। তারা সব জানে। আমি কোনো মন্তব্য করবো না।’
জানা গেছে, আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম) এর গ্রীস অফিসে কর্মরত এক গ্রীক-বাংলাদেশী নারীকে যৌন হয়রানি করেছেন রাষ্ট্রদূত গোলাম মোহাম্মদ। এই বিষয়ে সংস্থাটির মাধ্যমে ভুক্তভোগি ওই নারী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেন।
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়ে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। এই কমিটি তদন্তের উদ্দেশে গত আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে ঢাকা ছেড়ে ঘটনাস্থল গ্রীসে যান। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন দাখিল করে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (সমুদ্র) রিয়ার এডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলমের নেতৃত্বে তদন্ত দলে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক আবদুস সবুর মন্ডল এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক (প্রশাসন) কাজী আনারকলি।
প্রসঙ্গত, এর আগে চলতি বছরের প্রথমদিকে একই রাষ্ট্রদূতের বিরুদ্ধে একটি হোমমেড অডিও ক্লিপসহ একটি অভিযোগনামা ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল। এ জন্য রাষ্ট্রদূত গোলাম মোহাম্মদকে গত মে মাসে ঢাকায় ডেকে পাঠানো হয়।