রইজ উদ্দিন রকি : চলতি মৌসুমে সৈয়দপুরে গম কাটা মাড়াই শুরু হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর সৈয়দপুরে কৃষকরা গমের বাম্পার ফলন ঘরে তুলতে পারবেন বলে মনে করছেন গম চাষিরা।
চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সঠিক সময় উৎপাদিত পণ্য বাজার জাত করতে না পারার কারণে সৈয়দপুরে ধান, পাট ও আলুর আবাদ করে ন্যায্য মূল্য থেকে এবার কৃষকরা বঞ্চিত হওয়ায় এবারে গম চাষে ঝুঁকে পড়েছেন এ উপজেলার কৃষকরা। শতাব্দি, প্রদীপ, বিজয়, প্রতিভা, বারী গম-২৬, ২৮ সহ বিভিন্ন উচ্চ ফলনশীল জাতের গম আবাদ করেন উপজেলার পৌরসভাসহ কামারপুকুর, বাঙ্গালীপুর, কাশিরাম বেলপুকুর, খাতামধুপুর ও বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের কৃষকরা। ১শ ৫ দিন থেকে ১শ ২০ দিনের মধ্যে এ ফসল ঘরে তোলার সুযোগ থাকায় উপজেলার কৃষকরা গম আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।
একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, প্রতিমণ বোরো ধান উৎপাদনে ব্যয় হয় বর্তমানে ৫শ ৫০ টাকা, সেখানে প্রতিমণ গম উৎপাদনে ব্যয় প্রায় ৫শ টাকা। অথচ বোরো ধানের বিক্রয় বাজার দর প্রতিমন ৫শ থেকে ৬শ ৫০ টাকা। আর গম প্রতিমণ ৮শ টাকা। পাশাপাশি বোরো ধান আবাদের চেয়ে গম আবাদে প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ কীটপতঙ্গের আক্রমণ প্রতিরোধক্ষম অনেক বেশি। আবার বোরো ধান আবাদে লোকসানের ঝুঁকি রয়েছে, যা গম আবাদে ঝুঁকির সমভাবনা কম। তাই ভাল মুনাফার আশায় এখানকার কৃষকরা ক্রমেই গমের আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছে। ইতোমধ্যে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গম কাটা-মাড়াই শুরু হয়েছে। এতে একর প্রতি ৩৬ থেকে ৪০ মণ গম ঘরে তুলতে পারছেন বলে কৃষকরা জানান।
উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের কৃষক জামাম ও তৈয়ব জানান, এবার মৌসুমী আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় গমের ফলন বেশ ভালো হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ইতোমধ্যে গম কাটা শুরু হয়েছে। বর্তমান হাট-বাজার গুলোতে নতুন গম সন্তষ্ট দামে বেচাকেনাও চলছে। এভাবে গমের দাম থাকলে অবশ্যই আমরা কৃষকরা এবার লাভের মুখ দেখবো।
সৈয়দপুর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা হুমায়রা মন্ডল জানান, উপজেলার পৌরসভাসহ ৫টি ইউনিয়নে প্রায় ২৫০ হেক্টর জমিতে গম আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও তা লক্ষ্যমাত্রার অধিক প্রায় ৩০ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে। প্রায় ২৮০ হেক্টর জমিতে গম চাষের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৭৫ মেট্রিক টন গম। তিনি বলেন, বিপণন সুবিধা, কৃষি উপকরণের সহজলভ্যতা ও ফড়িয়াদের দৌরাত্ম কম হলে দিনদিন কৃষকরা গম চাষের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠবে।