প্রেস বিজ্ঞপ্তি: দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় ইউ,পি নির্বাচনে অনিয়ম, দূর্ণীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে আওয়ামীলীগের প্রার্থী বাছাই ও মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে অভিযোগ করা হয়েছে।
২৮ ফেব্রুয়ারী শনিবার বিকেলে স্থানীয় জাহানারা কন্ফারেন্স সেন্টারে মনোনয়ন বঞ্চিতদের পক্ষ্যে সংবাদ সম্মেলনে লিখত বক্তব্য দেন, ৪নং দিওড় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ বকুল হোসেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান মন্ডল ও সেক্রেটারী খায়রুল আলম রাজুর সাথে স্থানীয় জামায়াত ও বিএনপির গভীর সখ্যতা রয়েছে এবং তাদের আত্মীয় স্বজনরাই জামায়াত ও বিএনপির নেতা। এই উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান মনোনয়ন প্রত্যাশিতদের মধ্যে থেকে কৌশলে প্রকৃত আওয়ামীলীগারদের বাদ দিয়ে জনসম্পৃক্তাহীন প্রার্থীদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। একারণে উপজেলায় নৌকা প্রতীকধারী প্রার্থীদের পরাজয় অনিবার্য হয়ে উঠেছে। প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আওয়ামীলীগের প্রকৃত ইউনিয়ন কমিটিকে পাশ কাটিয়ে মনগড়া কাউন্সিলরদের দিয়ে প্রার্থী সিলেকশন করা হয়েছে। ফলে, অন্যান্য ত্যাগী নেতাদের সাথে ৪ জন বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান যথাক্রমে মোঃ ইয়াকুব আলী মন্ডল, ৩নং খানপুর ইউপি (উপজেলা কৃষকলীগের সহ-সভাপতি), মোঃ শামসুল আলম ২নং কাটলা ইউপি (উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি), মোঃ শাহজাহান আলী মন্ডল, ৬নং জোতবানী ইউপি (উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি) ও এ্যাড. হামিদুর রহমান ৫নং বিনাইল ইউপি (উপজেলা কৃষকলীগের সহ-সভাপতি) গনকে মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। যাদেরকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে তারা সকলেই জামায়াত-বিএনপির আস্থা ভাজন হিসেবে পরিচিত। বকুল হোসেন দৃঢ়তার সাথে বলেন, যাদের নৈাকা প্রতীক দেয়া হয়েছে তারা কেউ বিজয়ী হতে পারবে না। নৈাকার নিশ্চিত পরাজয়ের চক্রান্ত্রের দায়ভার উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদককেই নিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ৩নং খানপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা কৃষকলীগের সহ-সভাপতি ইয়াকুব আলী মন্ডল বলেন, পূর্বের অনুমোদিত কমিটি বাদ দিয়েই যে ভোটার তালিকা করা হয়েছে তার ৩৩ ভোটারই ভুয়া।
দিওড় ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও আ’লীগ নেতা আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, তিনি অনুমোদনকৃত কমিটির ৩৫ নং সদস্য থাকাসত্বেও বর্তমান উপজেলা সভাপতি-সম্পাদকদের ভুয়া ভোটার তালিকায় তার নাম নেই। কেন্দ্রীয় দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জেলা ,উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামীগের সমন্বয়ে নির্বাচনী বোর্ড গঠনের নির্দেশনা থাকলেও ইউনিয়ন সাধারন সম্পাদককে ভোটার পর্যন্ত রাখা হয়নি। অনিয়মের প্রতিবাদে প্রহসনের প্রতীক বরাদ্দের নির্বাচন তিনি লিখিত ভাবে প্রত্যাখান করেন। তিনি নৌকা প্রতীকের বিজয় নিশ্চিত করতে প্রহসনের প্রতীক বরাদ্দের নির্বাচনকে বাতিল করে অনুমোদনকৃত প্রকৃত কমিটির মতামত বা নির্বাচনের মাধ্যমে কার্যকর উদ্যোগ নিতে দলীয় প্রধানের দৃষ্টি আকর্ষন করেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক আশরাফুল ইসলামের স্বাক্ষরিত ১১ ফেব্রুয়ারী জারীকৃত পত্র উপস্থাপন করেন।
বিনাইল ইউপি আওয়ামীগের সভাপতি আ: করিম মাষ্টার বলেন , উপজেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক খায়রুল আলম রাজুর ভাই বিএনপি নেতা রবিউলের বিজয় নিশ্চিত করতেই বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ও আ”লীগ নেতা এ্যাডভোকেট হামিদুর রহমানের বিজয়কে নস্যাৎ করতেই আরেক বিএনপি কর্মী মিন্টুকে কল্পনাপ্রসূত ভোটার তালিকার মাধ্যমে নৌকা প্রতীক দিয়েছে। ইউপি সভাপতি হিসেবে ঐ তালিকায় তার কোন স্বাক্ষর নেই।
জোতবানী ইউপি আ’লীগ সাধারন সম্পাদক কবির হোসেন বলেন, তিনি সহ ওর্য়াড কমিটি ভুয়া ভোটার তালিকার মাধ্যমে প্রহসনের নির্বাচন আয়োজনের বিরোধীতা করেছেন। কিন্তু বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা কৃষক লীগের সহ-সভাপতি শাহাজাহান আলী মন্ডলের জনপ্রিয়তায় ঈর্শানিত হয়েই তাকে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ভুয়া ভোটার তৈরী করে নৌকা প্রতীক প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত করেছেন।
আরেক জনপ্রিয় নেতা উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি কাটলা ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যনি শামসুল আলম ২০ দলীয় জোট সন্ত্রাসে গুরুতর আহত হয়ে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিওে এলেও তাকেও প্রহসনের মাধ্যমে নৌকা প্রতীক থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
পৌর আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, উপজেলা আওয়ামীলীগ পৌর নির্বাচনে জনপ্রিয় নেতাকে বাদ দিয়ে শড়যন্ত্রের মাধ্যমে তাদের মদদপুষ্ঠকে নৌকা প্রতীক বরাদ্ধ দেওয়্য়া তৃনমূল নেতৃবৃন্দ ভোটের মাধ্যমে তাদের জবাব দিয়েছে। একই কায়দায় নৌকার কান্ডারীদের বিজয় নিশ্চিত করতে এবং জামাত-বিএনপির এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে উপজেলা সভাপতি ও সম্পাদক যে আতœঘাতি খেলায় মেতেছে তা রোধ করে পুনরায় প্রকৃত ও অনুমোদনপ্রাপ্ত কমিটির সদস্যদের সমন্বয়ে জনপ্রিয় প্রার্থীদের নৌকা প্রতীক বরাদ্দের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দেও দৃষ্টি আকর্ষন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ ও গনমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।