সিসি নিউজ, ৩০ নভেম্বর: ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আনিসুল হক লন্ডনের একটি হাসপাতালে মারা গেছেন। বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা ২২ মিনিটে তিনি মারা যান। মস্তিস্কের রক্তনালীতে বিরল প্রদাহে ভুগছিলেন তিনি। আনিসুল হকের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে পরিবার। বিরল রোগের কাছে শেষ পর্যন্ত হার মানলেন স্বপ্নবান এক সাহসী মানুষ আনিসুল হক। লন্ডনে জুম্মার নামাজ শেষে প্রথম জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হবে বলে গনমাধ্যম মারফত জানা গেছে। তারপরই আনিসুল হকের মরদেহ বাংলাদেশে আনা হবে।
আশির দশকের জনপ্রিয় টিভি উপস্থাপক থেকে ব্যবসায়ী সংগঠনের শীর্ষ নেতা। সবশেষে জনপ্রতিনিধি। মেধা আর দক্ষতায় মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নেন মেয়র আনিসুল হক।
১৯৫২ সালে নোয়াখালী জেলায় জন্মগ্রহণ করেন আনিসুল হক। শৈশবের বেশ কিছুটা সময় কেটেছে ফেনী জেলার সোনাগাজীর নানাবাড়িতে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর আনিসুল হক ১৯৮০ ও নব্বইয়ের দশকে টেলিভিশন উপস্থাপক হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি পান। ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে বিটিভিতে শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়ার মুখোমুখি অনুষ্ঠানও উপস্থাপনা করেন তিনি।
পাশাপাশি ব্যবসায়ী নেতা হিসেবেও গড়ে ওঠে পরিচিতি। রপ্তানিমুখী নয়টি প্রতিষ্ঠান নিয়ে ১৯৮৬ সালে মোহাম্মদি গ্রুপ গড়ে তোলেন আনিসুল হক। ২০০৫-৬ সালে বিজিএমইএর সভাপতির দায়িত্ব পালনের পর ২০০৮ সালে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিবিসিআই সভাপতি হন তিনি। এছাড়া ২০১০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ছিলেন সার্ক চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট।
২০১৫ সালে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মেয়র পদে নির্বাচিত হন আনিসুল হক। উত্তরের নগরপিতা হিসেবে অবৈধ পার্কিং, জলাবদ্ধতা, যানজট, কোরবানির বর্জ্য অপসারণের মতো বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ সফলভাবে মোকাবেলা করেছেন তিনি। নগরের বিভিন্ন সমাধানে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার ওপর জোর দিয়েছিলেন তিনি।
ব্যক্তিগত সফরে গত ২৯ জুলাই সপরিবারে লন্ডনে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন আনিসুল হক। তার মস্তিস্কের রক্তনালীতে সেরিব্রাল ভাসকুলাইটিস রোগ শনাক্ত করেন চিকিৎসকরা। লন্ডনের একটি হাসপাতালে ভর্তির পর নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখা হয়েছিল ৬৫ বছর বয়স্ক আনিসুল হককে। এরপর অবস্থার উন্নতি ঘটলে ৩১ অক্টোবর তাকে আইসিইউ থেকে রিহ্যাবিলিটেশনে স্থানান্তর করা হয়। তবে এক মাস পরেই ফের আইসিইউতে নেয়া হয় আনিসুল হককে।